
হজ সফরের পথিক হতে কার না মনে চায়? প্রতিটি মুসলমানেরই স্বপ্ন থাকে আল্লাহর ঘর জিয়ারতের। আল্লাহর রহমতের কাছাকাছি হতে। কিন্তু অনেকেরই জানা থাকেনা এই সফরে ব্যবহৃত পরিভাষাগুলো। বিশেষত বাংলাদেশি হাজিদের এ ক্ষেত্রে পড়তে হয় নানা বিড়ম্বনায়। আসুন, জেনে নিই এ সংক্রান্ত কিছু পরিভাষা।
১. ইহরাম : হজ বা উমরার নিয়ত করে তালবিয়া পড়া।
২. তালবিয়া : এই দুআ পড়া : লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইক। লাব্বাইকা লা-শারীকা লাকা লাব্বাইক। ইন্নাল হামদা ওয়াননি’মাতা লাকা ওয়ালমুলক লা-শারীকা লাক।
৩. ইছতিলাম : হাজরে আসওয়াদে চুমু দেওয়া অথবা হাত দিয়ে স্পর্শ করে বা হাত দিয়ে ইশারা করে তালুতে চুমু খাওয়া। রুকনে ইয়ামানীকে হাত দিয়ে স্পর্শ করাকেও ইছতিলাম বলা হয়।
৪. ইযতিবা : পুরুষের জন্য ইহরামের চাদর ডান বগলের নিচ দিয়ে বের করে বাম কাঁধের উপর রাখাকে ইযতিবা বলে। যে তাওয়াফের পর সাঈ আছে সে তাওয়াফ অবস্থায় এটা করণীয়।
৫. রমল : যে তাওয়াফের পর সাঈ আছে সে তাওয়াফের প্রথম তিন চক্কর কাঁধ হেলিয়ে দুলিয়ে ছোট ছোট পদে একটু দ্রুত ও বীরদর্পে হাঁটা।
৬. সাঈ : তাওয়াফ সম্পন্ন করার পর সাফা ও মারওয়ার মাঝে বিশেষ নিয়মে সাতবার চক্কর দেওয়া।
৭. মসজিদে হারাম : বাইতুল্লাহ শরীফকে চতুর্দিক থেকে যে বিশাল মসজিদ ঘিরে রেখেছে এটাই মসজিদে হারাম বা হারাম শরীফ।
৮. মুলতাযাম : হাজরে আসওয়াদ এবং বাইতুল্লাহ শরীফের দরজার মধ্যবর্তী দেওয়াল।
৯. রুকনে ইয়ামানী : বাইতুল্লাহর দক্ষিণ-পশ্চিম কোণ।
১০. হেরেম : মসজিদে হারামের চতুর্দিকে কিছু দূর পর্যন্ত নির্দিষ্ট এলাকাকে হেরেম বলা হয়। চারদিকে এর সীমানা চিহ্নিত রয়েছে। এখানে যুদ্ধ করা, পশুপাখি শিকার করা, গাছ কাটা নিষেধ। এখানে কাফেরদের প্রবেশও নিষেধ। হেরেমের বাইরের অংশকে ‘হিল’ বলে।
১১. মীকাত : মক্কাগামী বা হাজ্বীদের জন্য যে স্থান ইহরাম ব্যতীত অতিক্রম করা জায়েয নয় সেই স্থানকে ‘মীকাত’ বলা হয়। যেমন বাংলাদেশ থেকে বিমানের যাত্রীদের জন্য মীকাত ‘কারনুল মানাযিল’ ও ‘যাতু র্ইক’-এর মধ্যবর্তী স্থান।
১২. হিল : হেরেমের সীমানার বাইরে মীকাতের আগ পর্যন্ত স্থানকে হিল বলে।
১৩. দম : উমরাহ ও হজ্বের আমলে বিশেষ ত্র“টি হলে কিংবা ইহরাম অবস্থায় নিষিদ্ধ কোনো কাজ করে ফেললে হেরেমের এলাকায় ক্ষতিপূরণ হিসেবে একটি ছাগল-দুম্বা বা উট-গরুর সাত ভাগের এক ভাগ কুরবানী করাকে দম বলে। আর কোনো কোনো ভুলের কারণে গোটা গরু বা উট জবাই করতে হয়, একে ‘বাদানা’ বলে।
১৪. তাওয়াফ : হাজরে আসওয়াদের কোণ থেকে শুরু করে পুরো কাবা ঘর বিশেষ নিয়মে সাতবার চক্কর দেওয়া।
১৫. তাওয়াফে যিয়ারত : এটি হজ্বের ফরয তাওয়াফ। ১০ যিলহজ্ব সুবহে সাদিক থেকে ১২ যিলহজ্ব সূর্যাস্তের ভিতর এ তাওয়াফ করা হয়।
১৬. উকূফ : উকূফ অর্থ অবস্থান করা। নির্দিষ্ট সময়ে আরাফা ও মুযদালিফায় অবস্থান করাকে ‘উকূফ’ বলা হয়।
১৭. জামরাহ : হাজ্বীগণ মিনার যে তিনটি স্থানে কংকর নিক্ষেপ করেন তার প্রত্যেকটিকে ‘জামরাহ’ বলে, এর বহুবচন ‘জামারাত’।
১৮. তাওয়াফে বিদা : তাওয়াফে যিয়ারতের পর মক্কা থেকে বিদায়ের আগে যে তাওয়াফ করা হয় তাকে তাওয়াফে বিদা বলে। একে তাওয়াফে সদরও বলা হয়।
১৯. হাতীম : বাইতুল্লাহ শরীফ সংলগ্ন উত্তর দিকে মানুষ সমান প্রাচীর দিয়ে ঘেরা অংশ। এটি মূলত কাবা ঘরেরই অংশ।
২০. মাকামে ইবরাহীম : কাবার পূর্ব দিকে অর্থাৎ হাজরে আসওয়াদ ও রুকনে ইরাকীর মাঝ বরাবর মাতাফে কাঁচে ঘেরা একটি পাথর। যার উপর হযরত ইবরাহীম আ.-এর পদচিহ্ন রয়েছে।