আজকাল রিপোর্ট
কবিতা জীবনের কথা বলে, কবিতা দ্রোহের কথা বলে। কবিতা মানুষকে উজ্জীবিত করে, কবিতা মানুষকে আপ্লুত করে। কবিতা সমাজকে আন্দোলিত করে। কবিতা মানবচিত্তকে আলোকিত করে, ঝঙ্কৃত করে।
কবিতার এমনই এক ঝর্ণা ধারায় ¯œাত হয়েছিলেন গত রোববার সন্ধ্যায় অগনিত প্রবাসী । তারা উপস্থিত হয়েছিলেন বৃন্দ আবৃত্তির এক অনুপম অনুষ্ঠানে। এ ছিল ছয় আবৃত্তি শিল্পীর অনবদ্য এক পরিবেশনা। জ্যাকসন হাইটসের জুইশ সেন্টার মিলনায়তনে আয়োজিত এ অনুষ্ঠান কানায় কানায় ভরে উঠেছিল শ্রোতা সমাগমে। কোন মতে দাঁড়িয়ে থাকার একটু জায়গা কওে নিয়ে পুরো অনুষ্ঠানটি উপভোগ করেছেন অসংখ্য শ্রোতা।
‘আরো কত শব্দহীন হাঁটবে তুমি’-এমন আবাহন জানিয়ে নবগঠিত আবৃত্তি সংস্থা ‘কন্ঠচিত্র’ এই সন্ধ্যায় সূচনা করলো তাদেও শব্দহীন পথ চলা। অনাড়ম্বর অথচ দৃষ্টিনন্দন মঞ্চে দু’পাশে বিভক্ত হয়ে উপবিষ্ট ছয়জন শিল্পীর সার্বক্ষণিক উপস্থিতি উজ্জ্বল করে রেখেছিল পুরো দুইঘন্টার অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানের উপস্থাপনা ছিল আগাগোড়াই ব্যতিক্রমী। শুরু হয়েছিল পিলু াগের মূর্ছনা দিয়ে। কন্ঠ দিয়েছিলেন শান্তা নাগ। এরপর সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় আর শহীদ কাদরীর মোট চারটি কবিতার মিশ্রিত পরিবেশনা কন্ঠে তুলে নিয়েছিলেন ছয় আবৃত্তিশিল্পী আনোয়ারুল হক লাভলু, হীরা চৌধুরী, মিজানুর রহমান বিপ্লব, শান্তা শ্রাবণী, অদিতি সাদিয়া রহমান এবং সেমন্তী ওয়াহেদ। নিনি ওয়াহেদ ও মুত্তালিব বিশ্বাসের শুভেচ্ছা বক্তব্যের পর শুরু হয় বন্দনা। উন্মেষ দাস, মান্নান হীরা ও ফজল শাহাবুদ্দিনের কবিতা থেকে সংকলিত ও মোশাদ আলীর সুরারোপিত এ বন্দনা পরিবেশনায় ছিলেন আনোয়ারুল হক লাভলু।
কাজী নজরুল ইসলাম, জীবনানন্দ দাশ, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, শক্তি চট্টোপাধ্যায়,সলিল চৌধুরী, সৈয়দ শামসুল হক, দিলওয়ার, নবারুণ ভট্টাচার্য, নির্মলেন্দু গুণ, রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ, সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়, শহীদুরর হমান, শুভ দাশগুপ্ত, রাইনার মারিয়া রিলকে প্রমুখ কবিদের কবিতা দিয়ে সাজানো এ অনুষ্ঠান মালা মুগ্ধতায় আবিষ্ট করে রেখেছিল সবাইকে। ওয়াশিংটন থেকে আসা শিল্পী অদিতি সাদিয়া রহমানের কন্ঠে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘না পাঠানো চিঠি’ শ্রোতাদের অশ্রুসিক্ত করেছে। মনে হয়েছে সাদিয়া নিজেও কেঁদেছেন। চতুর্ভাষিক কোলাজে সেমন্তী ওয়াহেদ বাংলার পাশাপাশি ইংরেজি, স্প্যানিশ ও হিন্দিতে বঙ্গবন্ধু, মার্টিন লুথার কিং, চে গুয়েভারা, নেলসন ম্যান্ডেলা ও মহাত্মা গান্ধীর ভাষণের খন্ড খন্ড অংশ শুনিয়ে অনুষ্ঠানকে এক ভিন্ন ব্যঞ্জনায় নিয়ে গেছেন।
অনুষ্ঠান শেষে শ্রোতারা পরিপূর্ণ ভাল লাগা নিয়ে মিলনায়তন ছেড়েছেন।
আয়োজনের আলাপে কন্ঠ দিয়েছেন শান্তা নাগ, বাদ্য প্রক্ষেপণে আশরাফুল হাবিব মিহির এবং মন্দিরায় ছিলেন শহীদ উদ্দিন। পোষ্টার সৃজন/ কন্ঠচিত্রের ক্যালিগ্রাফি মিথুন আহমেদ, দৃশ্যপট নকশা ও চিত্রণ সেমন্তী ওয়াহেদ, সেট ডিজাইন মিজানুর রহমান বিপ্লব, মঞ্চ নির্মান আনোয়ার সেলিম, আশরাফুল হাবিব মিহির, আনোয়ারুল হক লাভলু ও হীরা চৌধুরী। ভিডিওচিত্র মুরাদ আকাশ, আলোক ও শব্দ নিয়ন্ত্রন বিডি সাউন্ড, মিলনায়তন কর্মী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন মাইশা, সুস্বনা, ময়ূরী, শর্মিষ্ঠা ও আবিবা।